Online Preparation for higher studies

 বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে?

আপনি কি বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণের কথা ভাবছেন? তাহলে ঘুড়ি লার্নিং এর এই পোস্ট আপনাকে শুরু থেকে বিদেশে সফলভাবে ল্যান্ড করার জন্য সম্পূর্ণ গাইডলাইন দিবে। বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি এবং স্কলারশিপ কিভাবে পাওয়া যায় সবকিছু নিয়েই এই আর্টিকেল। 

 

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের দেশ বিনির্মাণের কারিগর। তাই তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে, কোন ধরণের আপোষ তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে প্রতিবন্ধকতা বয়ে নিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করবে। পুঁথিগত বিদ্যাকে পেছনে ফেলে দক্ষতা এবং প্রযুক্তির জোরে এগিয়ে চলছে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রসমূহ। তাই আগামী ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে একজন যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথাগত শিক্ষাকে পেছনে ফেলে  বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন দেখে প্রতিটি শিক্ষার্থী। কেন বিদেশে শিক্ষার দিকে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা এবং দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সাথেই থাকুন।

 

কেন উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশ যাবেন

 

ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে ইচ্ছুক। উন্নতমানের জীবনযাত্রা, আধুনিক পড়াশোনা এবং শিক্ষার পাশাপাশি  চাকরীর ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে আজকাল বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। বিদেশী ডিগ্রির গ্রহণযোগ্যতা সময়ের সাথে সাথে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ চাকরির ক্ষেত্রে কিংবা বিশ্বের যেকোনো দেশে চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বিদেশী ডিগ্রিকে।

 

গবেষণা-মুখী শিক্ষা, পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা, রেসিডেন্সি পারমিট পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিজ ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর করার লক্ষ্যে আজকাল অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছুটে চলছে বিদেশে। তাই আপনি যদি শিক্ষাজীবনকে আধুনিক শিক্ষায় এবং প্রায়োগিক জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত চান তাহলে বিদেশে উচ্চশিক্ষা হতে পারে আপনার স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে অন্যতম পন্থা। 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতি কীভাবে নিবেন

 

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বিদেশে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করার স্বপ্ন নিয়ে তার স্নাতক ডিগ্রি শেষ করে। কোন কোন শিক্ষার্থী আবার এইচএসসি পর স্নাতক লেভেলে পড়ার জন্য পাড়ি জমায় তাদের স্বপ্নের দেশে। তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যে লেভেলের হোক না কেন তার বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তাকে কিছু পূর্ণ প্রস্তুতির প্রয়োজন পরে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক একজন শিক্ষার্থীর বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কি ধরনের পূর্বপ্রস্তুতি প্রয়োজন হয়। 

 

প্রস্তুতি গ্রহণ করুন আগে থেকে 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনাকে নিতে হবে আগে থেকেই প্রস্তুতি। সেক্ষেত্রে আপনাকে একাডেমিক রেজাল্ট এর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। একাডেমিক রেজাল্টের পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলামের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাইরের দেশের কোন শিক্ষার্থীর বিদেশ ভ্রমণকে বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। 

 

আপনি যত পারবেন ভ্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ ভ্রমণ মানুষকে উদার এবং বিনয়ী হতে সাহায্য  করে। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন ভলেন্টিয়ারিং কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধি করুন। এই সকল সহশিক্ষা কার্যক্রম আপনাকে বাইরের দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

 

ইংরেজি দক্ষতা যাচাই 

 

বিদেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আপনাকে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হল ভাষা-গত দক্ষতা যাচাই করা। প্রত্যেকটি দেশে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা রয়েছে। আপনি যখন যে দেশে যাবেন তখন আপনাকে সে ভাষার দক্ষতা যাচাই স্কোরের উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ কিংবা ভিসার জন্য নির্বাচিত হবেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ভাষা-গত দক্ষতা যাচাই করা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ! 

 

আপনার যদি টার্গেট থাকে ইউরোপ, আমেরিকা,কানাডা যাওয়ার তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি দক্ষতা যাচাই পরীক্ষার জন্য ভালো স্কোর অর্জন করতে হবে। বর্তমানে সারা-বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত  ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষার নাম হল IELTS, GRE, GMAT, TOFEL ইত্যাদি। উপযুক্ত পরীক্ষার স্কোর দিয়ে আপনার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করতে হবে। তাই স্বপ্ন যদি থাকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার তাহলে ভাষা দক্ষতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্য প্রস্তুতি নিন এখনই। 

 

সিজিপিএ 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের শিক্ষার মূল্যায়ন যাচাই কারক হিসেবে পরিচিত হল সিজিপিএ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রায়শই বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ সিজিপিএ এর কথা বলে। তবে হ্যাঁ ভালো স্কলারশিপ পেতে হলে আপনাকে আপনার রেজাল্ট এর দিকে নজর দিতে হবে। তাই অন্তত ৩.৫০ রাখার চেষ্টা করুন। কারণ রেজাল্ট ভালো হলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকাংশে। 

 

রিসার্চ পেপার 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রিসার্চ পেপার। আপনি যদি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে যান সেক্ষেত্রে আপনার রিসার্চ পেপার পাবলিশ থাকলে আপনি একটি ভালো স্কলারশিপ খুব সহজে পেয়ে যাবেন।

 

মূলত কোন গবেষণালব্ধ জার্নাল, আর্টিকেল কিংবা নিউজ পেপারে আপনি যদি লিখালিখি করেন এবং তার পাবলিশ লিংক আপনার ডকুমেন্ট এর সাথে পাঠিয়ে দেন তাহলে আপনি কম সিজিপিএ থাকলেও একটি ভালোমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ অর্জন করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। আজকাল ইন্টারনেট কিংবা ইউটিউব এর মধ্যে রিসার্চ পেপার সংক্রান্ত অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। বিস্তারিত জেনে নিজেই প্রকাশ করতে পারবেন আপনার রিসার্চ পেপার।

 

রিকোমেন্ডেশন 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে লেটার অফ রিকমেন্ডেশনকে বেশ গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। মূলত আপনার সম্পর্কে জানে, আপনাকে ভালো চিনে এমন ২ থেকে ৩ জন ব্যক্তির কাছ থেকে রিকোমেন্ডেশন আপনার প্রয়োজন হবে। তবে অবশ্যই পরিবারের কোন ব্যক্তির কাছ থেকে আপনি রিকমেন্ডেশন না চেয়ে আপনার কোন শিক্ষক, কোন মেন্টর, কোথাও জব করলে সেক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে আপনি রিকমেন্ডেশন লেটার নিতে পারেন। কারণ কারা রিকমেন্ডেশন দিচ্ছে তা মূল ব্যাপার নয়। বরং কি লিখছে সেটা মূল ব্যাপার।

 

এক্সপেরিয়েন্স 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এক্সপেরিয়েন্স আপনাকে বিদেশের মাটিতে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করুন। বর্তমানে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে বাংলাদেশে। তাই আপনি শুরু থেকে তাদের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই ভলেন্টিয়ারিং কার্যক্রম আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। 

 

উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই প্রক্রিয়া 

 

স্কলারশিপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের পূর্বে আপনাকে কোন দেশে যাবেন তা নিয়ে আগে ভাবতে হবে। দেশ নির্বাচনের পর আপনাকে শহর নির্বাচন করতে হবে। মূলত শিক্ষাব্যবস্থা এবং জীবিকা নির্বাহের হিসাব পরিসংখ্যান এর মাধ্যমে যাচাই কিরে আপনাকে বাছাইয়ের কাজটি করতে হবে। যেমন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আধুনিক জীবনমানের দিকে এগিয়ে আছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, কানাডা, মালয়েশিয়া, ইত্যাদি। 

 

তবে দেশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যেমন আপনাকে পড়াশোনার খরচ, টিউশন ফি, একোমোডেশন ফি, ইত্যাদি খরচসমূহ বিবেচনায় নিয়ে আপনাকে একটি দেশ সিলেক্ট করতে হবে। 

 

বিদেশে অনেক বিষয়ে পড়াশোনার মাধ্যম খোলা রয়েছে। তবে আপনি কোন বিষয়ে পড়তে চাচ্ছেন? সে বিষয়ের চাহিদা দেশ কিংবা বিদেশে ঠিক কতখানি রয়েছে— এই সকল বিষয়কে মাথায় রেখে আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত বিষয় বেছে নিতে হবে। কারণ ডিমান্ডেবল সাবজেক্টে পড়াশোনা করলে আপনার চাকরি পাবার স্বভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি। 

 

এবার আসি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে। এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যারা প্রথম সারির কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ধরণের স্কলারশিপ প্রদান করে না। আবার এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে তারা এক দেশের দ্বিতীয় সারির বিশ্ববিদ্যালয় হলেও অন্যদেশের তুলনায় একেবারে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখতে হবে আলোচিত বিষয়সমূহের উপর-


 

  • আপনার পছন্দের বিষয়ে আছে কিনা?
  • পড়াশোনার মান উন্নত কিনা? 
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের মান কেমন?
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান 
  • কোর্সের মেয়াদ এবং টিউশন ফি 
  • স্কলারশিপ 
  • আবাসন ব্যবস্থা 
  • ভর্তি যোগ্যতা

 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি দেশকে টার্গেট করে আবেদন করবেন না। বরং আপনার সক্ষমতা অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করুন।

 

স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে কি প্রয়োজন

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনাকে প্রথম থেকে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে। তাই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কি কি কাগজ পত্র আপনাকে সাথে রাখতে হবে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

 

স্কলারশিপ এপ্লিকেশন ফর্ম 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্কলারশিপ ফর্ম ডাউন-লোড করে তা সাথে সাথে পূরণ করা উচিত। অনেক ক্ষেত্রে মেইলে স্কলারশিপ পূরণ করতে হয় আবার কিছুক্ষেত্রে হার্ড-কপি সাবমিট করতে হয়। তাই সবার আগে আপনাকে আপনার স্কলারশিপ ফর্ম পাওয়া মাত্রই তা ফিলাপের কাজ করে নিতে হবে। 

 

একাডেমিক সনদ বা ট্রান্সক্রিপ্ট 

 

স্কলারশিপ ফর্মের সাথে আপনাকে আপনার শিক্ষাজীবনের যাবতীয় সকল ধরণের ডকুমেন্ট সাথে সত্যায়িত করে দিতে হবে। তাই স্কলারশিপের জন্য আবেদনের পূর্বে এই ডকুমেন্টগুলো আপনাকে সংগ্রহ করে সত্যায়িত করে রাখতে হবে। 

 

পাসপোর্ট কিংবা ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি 

 

অবশ্যই আপনার বিদেশে আবেদনের পূর্বে একটি বৈধ পাসপোর্ট রেডি রাখতে হবে। পাসপোর্ট এর মেয়াদ যাতে কমপক্ষে ৬ মাস থাকে সেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। এপ্লিকেশন ফর্মের সাথে আপনার পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে। 

 

ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর 

 

আপনি যে দেশে এপ্লাই করুন না কেন স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার প্ৰয়োজন হবে ইংরেজি দক্ষতার যাচাইয়ের স্কোর। তাই বিদেশে যাওয়ার পূর্বে আপনাকে ইংরেজি দক্ষতা যাচাই স্কোরের মার্ক সংগ্রহ করতে হবে। তাই আপনার ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষার মার্ক-শিট আগেই সত্যায়িত করে নিতে হবে। 

 

স্টেটমেন্ট অফ পারপাস 

 

একটি ভালো স্টেটমেন্ট অফ পারপাস বা SOP  আপনাকে একটি ভালো স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের  একাডেমিক রেজাল্ট তেমন ভালো নয়। কারো কারো ইংরেজি দক্ষতা স্কোর ভালো হয় না। তাই আপনি ভালোমানের SOP তৈরি করতে পারেন তাহলে এক্ষেত্রে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার পথ উন্মুক্ত করে দিতে পারে।  

 

রিকমেন্ডেশন লেটার 

 

স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য রিকমেন্ডেশন বেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রায় সব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই এই ফর্ম দেওয়া থাকে। তাই আপনি চাইলে এই ফর্মের পাশাপাশি নিজের লেখা পেপারও যুক্ত করতে পারবেন। তাই আপনাকে চিনে, জানে এমন ব্যক্তি থেকে  রিকোমেন্ডেশন লেটার নেওয়ার চেষ্টা করুন।

 

.  সিভি 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে স্কলারশিপের আবেদন পত্রের সাথে একটি সিভি জমা দিতে হবে। আপনার ব্যক্তিগত এবং প্রয়োজনীয় সকল তথ্য আপনার সিভিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন। 

 

পিতামাতার আর্থিক তথ্য

 

বিভিন্ন  বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্ত অনুযায়ী আপনাকে আংশিক স্কলারশিপ প্রদানের ক্ষেত্রে তারা  আপনার  পিতামাতার আর্থিক তথ্য অথবা আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রমাণ দেখতে চায়। তাই সেক্ষেত্রে ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদন পত্রের সাথে দিতে হবে। 

 

স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রমাণপত্র

 

আপনি শারীরিকভাবে ফিট কিনা তা যাচাইয়ের জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর আপনাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রমাণপত্র স্ক্যান করে পাঠাতে হবে।  

 

১০গবেষণা গ্রন্থ 

 

আপনি যদি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনার পাবলিশ আর্টিকেল এবং জার্নাল লিঙ্ক সাথে দিতে পারেন— এতে স্কলারশিপ পাওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যাবে অনেকখানি। 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কি ধরণের সুবিধা রয়েছে?

 

উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য বিদেশে যাওয়া প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে একটি স্বপ্নের নাম। দিন দিন এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন দেশ। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী ঠিক কি ধরণের সুযোগ সুবিধা অর্জন করতে পারবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে। 

 

আত্ননির্ভরশীলতা 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আপনি পরিপূর্ণভাবে আত্ননির্ভরশীলতা অর্জনের সুযোগ পাবেন। পূর্বে যেখানে আপনি পরিবারের উপর নির্ভরশীল থাকতেন, এখন আপনাকে আপনার জীবনের সকল ধরণের সিদ্ধান্ত আপনাকে নিতে হবে। বিদেশে কোন ধরণের হেল্পিং হ্যান্ড নেই বিধায় আপনার ব্যক্তিগত  কাজগুলো আপনাকে করতে হবে। সেই সাথে ব্যক্তিগত হিসাব নিকাশ মেনে চলার মাধ্যমে জীবনের অর্থ আপনি সহজে বুঝতে পারবেন। অর্থাৎ বিদেশে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে আপনি পুরোপুরি আত্ননির্ভশীল হওয়া সুযোগ অর্জন করবেন। 

 

সংস্কৃতি চর্চা

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পাবেন। এক দেশ থেকে অন্যদেশে কি পরিমাণ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে তা আপনি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে না আসলে কখনোই অনুধাবন করতে পারবেন না। 

 

একটি ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন সংস্কৃতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া কষ্টকর হলেও আপনি খুব সহজে ধীরে ধীরে একটি নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখবেন। পাশাপাশি আপনি একটি ভিন্ন দেশে আচার আচরণ, সংস্কৃতি, নানা ধরণের অনুষ্ঠান সম্পর্কে খুব কাছে থেকে জানার সুযোগ অর্জন করতে পারবেন। 

 

নতুন ভাষা রপ্ত 

 

আপনি যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে আসবেন সে দেশের সংস্কৃতির সাথে ভাষার বেশ পরিবর্তন রয়েছে। তাই একটি ভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাওয়ার ফলে আপনি সে দেশের ভাষা রপ্ত করতে পারবেন। 

 

একটি ভিনদেশে এসে সে দেশের ভাষা রপ্ত করতে পারলে আপনি চলার ক্ষেত্রে যেমন সুবিধা পাবেন ঠিক তেমনি করে সে দেশের মানুষের সাথে খুব তাড়াতাড়ি যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বেশ সুবিধা পাবেন। 

 

কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপ 

 

বর্তমানে চলার ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন স্কিল এর উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই কমিউনিকেশন স্কিল আপনাকে একটি ভিন্ন দেশের নতুন পরিবেশকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি আপনাকে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

 

আধুনিক শিক্ষা অর্জন 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে আপনি উন্নত এবং আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পাবেন। দেশের পুঁথিগত বিদ্যা থেকে আপনি গবেষণালব্ধ শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় সাধন করতে পারবেন। নতুন পরিবেশ, নতুন জীবনযাত্রার সাথে আপনি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হবার পরিপূর্ণ সুযোগ পাবেন। 

 

ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট 

 

দেশের বাজারে বিদেশে উচ্চশিক্ষার কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানসমূহে আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ফলে খুব সহজে নিজের পছন্দের পজিশনে চাকরি করতে পারছেন। পাশাপাশি একটি ডিগ্রী পাচ্ছেন যা আপনার বিদেশের মাটিতেও ক্যারিয়ার বুস্ট করতে বেশ সাহায্য করবে। 

 

এডভেঞ্চার 

 

আপনি যখন একটি নতুন দেশে যাবেন সে দেশকে জানার ক্ষেত্রে ভ্রমণের বিকল্প নেই। তাই আপনি যখন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে আসবেন তখন আপনি একটি নতুন দেশ সম্পর্কে এডভেঞ্চার করার সুযোগ পাবেন। একটি নতুন দেশ এক্সপ্লোরের মাধ্যমে সে দেশের পরিবেশের সঙ্গে খুব সহজে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন। 

 

পার্ট টাইম চাকরি 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল পার্ট টাইম চাকরি। আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে আয় করতে পারবেন। বেশিরভাগ দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ পেতে শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। 

 

একটি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ 

 

বর্তমান বাজারে বিদেশে উচ্চশিক্ষার চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। আপনি যদি একটি ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনাকে চাকরি খুঁজতে হৰে না বরং চাকরি আপনাকে খুঁজে নিবে। তাই একটি ভালো মানের চাকরি, উন্নত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে চাইলে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আপনাকে স্বাগতম। 

 

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অসুবিধাসমূহ 

 

সুবিধার পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীকে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অসুবিধাসমূহ। 

 

ভিন্ন পরিবেশ 

 

সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগতে পারে। কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে মানিয়ে না নিতে পারলে উচ্চশিক্ষায় ভিন্ন দেশে টিকে থাকা আপনার জন্য বেশ তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্ম দিবে। 

 

একাকীত্ব 

 

একটি ভিন্ন দেশে ভিন্ন পরিস্থিতিতে পরিবার পরিজন ছাড়া জীবন যাপন করতে হবে আপনাকে। তাই নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে না পারার কারণে অনেক শিক্ষার্থী একাকীত্বে ভুগেন। 

 

অতিরিক্ত চাহিদা 

 

বিদেশে এসে শুরুর দিকে আমাদের অনেক চাহিদা থাকবে কিন্তু প্রথম দিকে আপনার অতিরিক্ত চাহিদা বেশি হলে আপনার সামনের দিনগুলো বেশ দুর্দশাগ্রস্ত হতে পারে। তাই প্রত্যাশা না রেখে নিজের কাজ করে যাওয়া উত্তম। 

 

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন 

 

বিদেশে এসে অনেক শিক্ষার্থী অভ্যস্ত হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের দিকে। নিজ সংস্কৃতিকে ভুলে গিয়ে অন্যের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে অনেকে বেশ ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। 

 

অতিরিক্ত খরচ 

 

বিদেশের মাটিতে অতিরিক্ত খরচ আপনার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ বিপর্যয়ে ফেলতে পারে। তাই খরচ সীমিত না করলে অচিরেই ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। 

 

শেষকথা

 

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিদেশ যাওয়া একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার নাম। কারণ আপনি রাতারাতি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারবেন না। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আপনাকে সফলতা এনে দিতে সাহায্য করবে।

 

এ রকম আরও ব্লগ নিয়মিত পেতে আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন আর নিজের স্কিল ডেভলপ করতে যা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ কার্যকরী ঘুড়ি লার্নিং এর কোর্সে অংশগ্রহণ করুন। ধন্যবাদ। 

Comments

Popular posts from this blog

What is cybersecurity? Why it is important?

Earn More Money With SEO Career In Bangladesh

বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্স ডাটা এন্ট্রি কাজ পাওয়ার ১০ টি সহজ উপায়।